প্রাকৃতিক ভাবে আমরা ডাব এর পানি পেয়ে থাকি। এই গরমে ডাবের পানির উপকারিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই গরমে আমরা তৃষ্ণা মেটাতে অনেক ধরনের পানীয় পান করি। কিন্তু এসব পানীয় শরীরের কতটা উপকার বা ক্ষতি করছে তা নিয়ে আমাদের ধারণাই নেই।
গরমের কারণে শরীর থেকে যে তাপ বেরিয়ে আসে তা মেটানোর জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের ফলের রস, কোমল পানীয় ও মুচির পানি সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
স্বাস্থ্যের জন্য ডাবের পানির উপকারিতা
ডাবের পানি শুধু পান হিসেবেই উপকারী নয়, এতে রয়েছে প্রচুর খনিজ লবণ। বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যা অনেক জটিল রোগের চিকিৎসায় সাহায্য করে। স্বাস্থ্যের জন্য ডাবের পানির উপকারিতা অপরিসীম।
ডাবের পানি কলেরা প্রতিরোধ করে, বদহজম দূর করতে সাহায্য করে, হজমশক্তি বাড়ায়, গরমে পানিশূন্যতার সমস্যায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ব্যায়াম করার পর যখন ঘি খেয়ে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তখন নারকেল পানি পান করলে শরীরের তরল ভারসাম্য বজায় থাকে। বিভিন্ন রোগের জন্য ডাবের পানির উপকারিতার গুরুত্ব অপরিসীম।
ডায়াবেটিস রোগীরা নারকেল পানি পান করতে পারেন। ডাবের পানি শিশুদের বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরে রক্ত চলাচল ভালো রাখে। কোলাইটিস, আলসার, গ্যাস্ট্রিক, পাইলস, ডিসেন্ট্রি এবং কিডনিতে পাথরসহ এসব সমস্যায় সন্দেহ খুবই উপকারী। ঘন ঘন বমি হলে ডাবের পানি ওষুধ হিসেবে কাজ করে। তাই কৃত্রিম ক্ষতিকর মদ্যপানের পরিবর্তে মুচির পানি পান করার অভ্যাস করুন। এতে গরমেও তৃষ্ণা মেটে, শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে।
বিভিন্ন রোগের জন্য ডাবের পানির উপকারিতা
নিয়মিত ডাব খেলে কিডনি রোগ হয় না। আপনার কিডনি রোগ থাকলে নিয়মিত পানি পান করা নিষেধ। কারণ অতিরিক্ত পেপটিক কিডনি অকেজো হয়ে গেলে শরীর থেকে বের হয় না। ফলে ডাবের পানির সঙ্গে পটাশিয়াম একসঙ্গে খেলে কিডনি ও হার্ট দুটোই অকেজো হয়ে যায়। এ অবস্থায় রোগীর মৃত্যু অনিবার্য। তাই যাদের প্রচুর পটাশিয়াম আছে এবং বের হয় না তাদের মুচির পানি খাওয়া ঠিক নয়। পানীয় জল পান করার আগে, আপনি এটি পান করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
শরীরে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব থাকলে এবং নানা রোগ হলে ডাবের পানি পান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ডায়রিয়া বা কলেরার রোগীদের প্রায়ই আলগা মল এবং বমি হয়, যার ফলে শরীরে পানি ও খনিজ পদার্থের অভাব হয়। প্রজনন জল খুব প্রায়ই এই অভাব জন্য করতে পারেন।
নিয়মিত পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও কিডনির রোগ প্রতিরোধ হয়। নারকেলের পানিতেও প্রচুর আয়রন থাকে। রক্ত গঠনের জন্য আয়রন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শরীরে রক্ত সঠিকভাবে তৈরি হলে প্রতিটি অঙ্গ শক্তিশালী হবে, তাই শক্তি বৃদ্ধি পাবে। শরীরে আয়রনের পরিমাণ ঠিক থাকলে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।
কলের পানিতে খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাসের উপস্থিতি বেশি। এই খনিজ লবণ দাঁতের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। দাঁতে শুকনো কাঠি অনেকের দাঁতে ঘা থেকে রক্তপাত হয়। মাড়ি অন্ধকারে লাল হয়ে যায়। হাসলে বা কথা বলার সময় উপস্থিত হয়। এটি আপনাকে খনিজ লবণ থেকে রক্ষা করবে। হাড় যেমন মজবুত, তেমনি হাঁটাও একধরনের আত্মবিশ্বাস।
এই গরমে শরীরের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক তাপমাত্রা ছোট-বড় উভয় ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি পায়। এটি ত্বককে কালো করে। কোবিং পানি শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে শরীরকে ঠান্ডা করে। তারুণ্য ধরে রাখতে এর অবদান অপরিহার্য। ছোলার পানি যেকোনো কোমল পানীয়ের চেয়ে বেশি পুষ্টিকর। কারণ, এটি একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও চর্বিহীন পানীয়। মিষ্টি হওয়া সত্ত্বেও এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী কিনা সন্দেহ।
প্রস্রাবের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ডিমের পানি পাওয়া যায়। মুখের কালো দাগের জন্য সকালে পানি লাগালে দাগ দূর হয় এবং মুখের সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। নারকেলের পানি গ্লুকোজ স্যালাইন হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। ক্যান পানিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পুষ্টি থাকে না, তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
অতিরিক্ত প্রশ্ন
খালি পেটে ডাবের পানি খেলে কি হয়?
ডাবের পানিতে রয়েছে লরিক অ্যাসিড, যা নানা ধরনের রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। পুষ্টিগুণে ভরপুর ডাবের পানি খালি পেটে খেলে এর কোনও উপাদানই শরীর গ্রহণ করতে পারে না।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা কি কি?
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন এক গ্লাস করে ডাবের পানিই যথেষ্ট। ডাবের পানিতে ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার থাকে। ফলে মা ও সন্তান দুজনের স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো।
এছাড়াও ডাবের পানি পান করলে শিশুর মস্তিষ্ক ভালো থাকে।